Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী চিন্তায় পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার

১মো. ইমদাদুল হক, ২মো. কামরুজ্জামান

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আইজ্যান হাওয়ার্সের ১৯৫৩ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে এটমস ফর পিস (অঃড়সং ভড়ৎ চবধপব) বিষয়ে      বক্তৃতার মূল উদ্দেশ্য ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পরমাণু শক্তির সামরিক প্রয়োগে বিশ্ববাসী যে মানবিক বিপর্যয়ে ছিল তা থেকে দৃষ্টি সরানোর লক্ষ্যে, পারমাণবিক শক্তি কিভাবে শান্তিপূর্ণ পর্যায়ে ব্যবহার করা যায় সে সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে আস্থায় আনা। অপরটি হচ্ছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রবাহিনীর মাধ্যমে পরমাণু প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ করে অন্য কোনো দেশ যাতে পারমাণবিক প্রযুক্তি সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে না পারে সে লক্ষ্যে জাতিসংঘের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হিসেবে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি এজেন্সি (আইএইএ) নামক বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা। অতঃপর ১৯৫৭ সালে অষ্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনামে আইএইএ নামক একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান আত্মপ্রকাশ করে। বাংলাদেশ ২৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭২ সালে আইএইএর সদস্যপদ লাভ করে, কিন্তু জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য হয় ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪ সালে। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ৩১শে আগস্ট ১৯৭৯ সালে পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তাররোধ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে।
এদেশে সর্বপ্রথম ১৯৬২ সালে গবেষণা কাজে ঢাকায় বাংলা একাডেমি সংলগ্ন পরমাণু শক্তি কেন্দ্র  প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ       মুজিবুর রহমান প্রেসিডেন্সিয়াল অর্ডার-১৫, ১৯৭৩ এর মাধ্যমে দেশে পরমাণু শক্তি শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন গঠন করেন। বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী চিন্তাভাবনা ও পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের  প্রতি আগ্রহ এবং তাঁর জামাতা বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী       ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার পরামর্শে পরমাণু শক্তি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহারের লক্ষ্যে যুক্তরাজ্যের পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের আদলে দেশে পরমাণু গবেষণাগার তৈরি করার জন্য সাভারে ২৬৫ একর জমি বরাদ্দ দেন এবং সেখানে পরে প্রতিষ্ঠিত হয় দেশের বৃহত্তর পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান। অতঃপর এ প্রতিষ্ঠানেই ১৯৮৬ সালে স্থাপন করা হয় ৩ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন পারমাণবিক গবেষণা চুল্লি। আইএইএ-র কারিগরি সহযোগিতায় পরমাণু শিক্ষা ও গবেষণা, খাদ্য নিরাপত্তা, খাদ্য সুরক্ষা, স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়ন, পানিতে আইসোটোপ কৌশল প্রয়োগ, পরিবেশ সুরক্ষা,      নন-ডেস্ট্রাকটিভ টেস্টিংয়ের মতো শিল্প সহায়তা, শস্য ও গবাদিপশুর উন্নয়ন এবং পতঙ্গ নিয়ন্ত্রণের মতো অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রভ‚ত উন্নতি সাধন করেছে।
পুষ্টি নিরাপত্তায় পারমাণবিক কৌশল : বিজ্ঞানের ভাষায়, ফসলের বৈশিষ্ট্য সমূহ নিয়ন্ত্রিত হয় ভিন্ন ভিন্ন জিনের মাধ্যমে। সকল জিনের কাজ এক রকম নয়। কোনো জিন ফসলের ফলনের জন্য দায়ী, কোনটি উচ্চতা, কোনটি রং, কোনটি রোগ সৃষ্টির আবার কোনটি রোগ প্রতিরোধের। এ রকম হাজারো বৈশিষ্ট্যের জন্য হাজারো রকম জিন দায়ী। এ জিনগুলো চারটি নিউক্লিওটাইড : এডিনোসিন, থাইমিন গুয়ানোসিন, সাইটোসিনের দীর্ঘ চেইনের মাধ্যমে গঠিত। দীর্ঘ এ চেইনের কোথাও একটু পরিবর্তন ঘটলে এর কার্যক্রমের পরিবর্তন ঘটতে পারে। এ পরিবর্তনের ফলে নানান কিছু হতে পারে। রোগ সংবেদনশীল জিনটি রোগপ্রতিরোধী হতে পারে, প্রতিক‚ল আবহাওয়ার উপযোগী জিনের উদ্ভব ঘটতে পারে যা ফসলের জন্য কাক্সিক্ষত। তেজস্ক্রিয় রশ্মি ফসলের বীজ, কাÐ, পাতা, পরাগরেণু ইত্যাদিতে একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় প্রয়োগ করলে ক্রোমোসোমের মধ্যে এ সকল বংশগতির পরিব্যপ্তিক পরিবর্তনই ঘটে। সংখ্যায় কম হলেও দৈব এ ঘটনার মাধ্যমে ফসলের কাক্সিক্ষত জাত উদ্ভাবন করা সম্ভব। প্রায় ৩০০ খ্রীষ্টপূর্বে চাইনিজ একটি বই ‘খঁষধহ’ তে সর্বপ্রথম ফসলের পরিব্যাপ্তিক পরিবর্তনের মাধ্যমে ভাল জাত নির্বাচনের কথা বলা হয়েছিল। তবে বিশ্বে সর্বপ্রথম ‘টিউলিপ’ ফুলে গামা রশ্মি প্রয়োগের মাধ্যমে ১৯৫৪ সালে একটি মিউট্যান্ট জাত উদ্ভাবন করা হয়েছিল। আর এর পর থেকেই বিভিন্ন ফসলের গবেষণায় পরমাণু শক্তির নিয়মিত ব্যবহার হয়ে আসছে এবং এ ক্ষেত্রকে আরও গতিশীল করে তুলেছে। আইএইএ ও আন্তর্জাতিক গবেষণাপ্রবন্ধে বলা হচ্ছে, পরমাণু শক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ফসলের উৎপাদন শতকরা ১৫-২০ শতাংশ বৃদ্ধি করা সম্ভব। এছাড়াও উচ্চফলনশীল আগাম, রোগ, বন্যা, খরা ইত্যাদি প্রতিরোধী জাত উদ্ভাবন করা সম্ভব।
বাংলাদেশে তেজষ্ক্রিয় পরমাণু থেকে নির্গত গামারশ্মি এবং অন্যান্য অগ্রসর প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ফসলের জাত উন্নয়ন করছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার এগ্রিকালচার (বিনা)। এটির প্রধান কেন্দ্র ময়মনসিংহের  বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে অবস্থিত। এছাড়া সারাদেশে ১৩টি উপকেন্দ্র নিয়ে আঞ্চলিক গবেষণা পরিচালনা করে থাকে। বিনা খাদ্যশস্য গবেষণায় পরমাণু শক্তির ব্যবহারকারী দেশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান। আইএইএর কারিগরি সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটি উচ্চফলনশীল, লবণাক্ত ও বন্যা সহিষ্ণু শস্যের জাতের উন্নয়ন ও উদ্ভাবন  করে দেশের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় অগ্রগামী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি এ যাবৎ ১৮টি ফসলের ১০৭টি লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। যার বেশিরভাগই বৈশ্বিক উষ্ণতা  বাড়ার কারণে সৃষ্ট কৃষির হুমকিসমূহ মোকাবেলায় অত্যন্ত উপযোগী। ধানের নতুন জাত ব্যবহার ও পারমাণবিক কৌশলের       সহায়তায় বাংলাদেশ গত কয়েক দশকে ধানের উৎপাদন তিন গুণ বৃদ্ধি করেছে। বিনা উদ্ভাবিত আমনজাতের ধান          বিনাধান-৭ উত্তরবঙ্গে মঙ্গা নিরসন করেছে। বন্যা পরবর্তী সময়ে পানি নেমে গেলে কৃষক ভাইয়েরা ধানের চারা পাওয়া নিয়ে সমস্যায় পড়েন। এ সমস্যা নিরসনে বিনাশাইল জাতের ধান উদ্ভাবন করা হয়েছে। জাতটি বন্যার পরপর অর্থাৎ একটু দেরিতে রোপণ করলেও হেক্টরপ্রতি ৩.৫-৪.০ টন ফলন দিতে পারে। সমুদ্র উপক‚লীয় লবণাক্ত জেলাসমূহে ধান চাষ বিঘিœত হচ্ছে। বিনা উদ্ভাবিত বোরো মৌসুমের জন্য লবণসহিষ্ণু ধানের জাত বিনাধান-৮, ইতোমধ্যে ৮-১০ ডেসি সিমেন/মিটার (ডিএস/মি.) মাত্রায় লবণ সহনশীল এবং     বিনাধান-১০ যা  ১২-১৪ ডেসি সিমেন/মিটার মাত্রায় লবণ    সহনশীল। ইতিমধ্যে জাত দুটি উল্লেখিত জেলাসমূহে ব্যাপকহারে চাষাবাদ হচ্ছে। উচ্চ তাপমাত্রা সহনশীল, স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন জাত বিনাধান-১৪। জাতটির চালেপ্রায় শতকরা ১০ ভাগ আমিষ আছে যা ধানের অন্যান্য জাতের তুলনায়প্রায় শতকরা ২ ভাগ বেশি। যদি একজন         মানুষপ্রতিদিন এ জাতের ৪৫৩ গ্রাম চালের ভাত খায় তবে অন্যান্য জাত অপেক্ষা ৯.০৬ গ্রাম বেশি আমিষ পাবে।
 লবণাক্ত এলাকায় বেশির ভাগ জমি রবি মৌসুমে খালি থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, ৮ ডি. এস./মি. লবণাক্ততা সহিষ্ণু একটি চীনাবাদামের জাত উদ্ভাবন সম্ভব হলে প্রায় ৫ লক্ষ হেক্টর জমিতে চীনাবাদাম চাষ সম্ভব হবে যেখান থেকে ১০ লক্ষ টন বাদাম ও ৩.৫ লক্ষ টন ভোজ্য তেল পাওয়া সম্ভব। বিনার রয়েছে উচ্চ তাপমাত্রা   সহনশীল চীনাবাদামের জাত, বিনাচীনাবাদাম-১ ও বিনাচীনাবাদাম-২। গবেষণায় দেখা গেছে বাতাসের গড় তাপমাত্রা ৪০ডিগ্রী সেলসিয়াস হলেও চীনাবাদামের জাত ২টি ভালো ফলন দিতে পারে। বাংলাদেশের লবণাক্ত এলাকার জন্য বিনা উদ্ভাবন করেছে বিনাসরিষা-৫, বিনাসরিষা-৬, বিনাসরিষা-৭ ও  বিনাসরিষা-৮। চারটি জাতই ৬ ডি.এস./মি. লবণাক্ততা সহনশীল হওয়ায় উক্ত জমিতে চাষ করা সম্ভব। পূর্বে লবণ সহিষ্ণু জাত না থাকার কারণে জমি পতিত থাকত। যা রবি মৌসুমে লবণাক্ততার কারণে পতিত থাকে চাষ করা সম্ভব। যে সব এলাকায় সেচের সুবিধা কম সেখানে খরা সহনশীল বিনার ৪টি জাত চাষের মাধ্যমে ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিসহ বাংলাদেশের ভোজ্যতেলের ঘাটতি কমিয়ে আনতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে সক্ষম। জাতগুলো চাষের জন্য মাত্র ১/২টি সেচই যথেষ্ট। জাতগুলোর ফলন যথাক্রমে ১.৪, ১.৮ ও ১.৭  টন/হেক্টর। বিনাতিল-১ এর বীজে তেলের পরিমাণ অন্যান্য জাত অপেক্ষা অনেক বেশি (৫০%)। বিনামুগ-৮ জাতটি উচ্চফলনশীল (হেক্টরপ্রতি গড় ফলন   ১.৮-২.০ টন) এবং অধিক প্রোটিন সমৃদ্ধ (২২.৫%), ফলপ্রায় একসাথে পাকে। পাতা হলুদ মোজাইক রোগ সহ্যক্ষমতা সম্পন্ন। জাতটি খরিফ ও রবি দুই মৌসুমেই চাষ করা যায়।          বিনামুগ-৮ সারাদেশে চাষ করা যায়। গম ও আলু উঠানোর পর আমন ধান রোপণের পূর্বে জমিতে এ সময় অন্য কোন ফসল না থাকায় বিনামুগ-৮ এর চাষ হয়ে থাকে। আমন ধান কর্তনের পর বরেন্দ্র এলাকায় অধিকাংশ জমিতে পানির অভাবে কোন ফসল আবাদ করা সম্ভব হয় না। কিন্তু বিনাছোলার জাতসমূহ চাষাবাদে কম পানির প্রয়োজন হয় বিধায় খরাপ্রবণ বরেন্দ্র এলাকায় এর ব্যাপক চাষ হচ্ছে। বাংলাদেশে নতুন উদ্ভাবিত চীনাবাদাম জাতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ও সবচেয়ে বেশি সমাদৃত জাত      বিনাচীনাবাদাম-৪। বিনাচীনাবাদাম-৪ সারা বছর সমান ফলন দেয়। হেক্টরপ্রতি ফলন ২.৫-৩.০ টন। বীজে তেলের পরিমাণ শতকরা ৪৮.৬ ভাগ ও আমিষের পরিমাণ ২৭.৫ ভাগ।          চীনাবাদাম শিকড়ের নডিউলের মাধ্যমে জমিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে বায়বীয় নাইট্রোজেন যুক্ত করে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি করে। বিনা উদ্ভাবিত সয়াবিন জাতগুলোতে আমিষের পরিমাণ শতকরা ৪৩-৪৪.৫ ভাগ। ফলন ২.৪-৩.০ টন/হেক্টর। বিনাপাটশাক-১ নামক সারা বছর চাষ করা যায় শাকের এ জাতটিতে অল্প সংখ্যক গাছে অনেক বেশি শাক পাওয়া যায়, প্রচুর ভিটামিন-ই সমৃদ্ধ ও ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক।
পরিশেষে বলা যায় শুধু বাংলাদেশেই নয়, পরমাণু শক্তির এ রকম শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে  বিশ্বব্যাপী আজ ৩ হাজারের অধিক উদ্ভিদ বৈচিত্র্যের উন্নতি করা হয়েছে। বিশ্বের জনসংখ্যার দ্রæত বৃদ্ধি এবং পরিবেশ আরো চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠায় বৈশ্বিক খাদ্য চাহিদা মেটানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন অব্যাহত রাখবে এই পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের কলা কৌশল। য়

১বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ, বিনা, মোবা : ০১৯১৩৬৩৭৮১৫, ই- মেইল : ধঢ়ঁ.ঢ়ংঃঁ@মসধরষ.পড়স  ২ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ , বিনা, ময়মনসিংহ-২২০২, মোবাইল : ০১৭৭৬৯৬০৭৬৯

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon